রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করা পরীক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল ও পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন র্থীরা। রবিবার (২০ নভেম্বর) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ দাবি জানান তারা।

কর্মসূচিতে ভর্তি বাতিলের জন্য ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা। ভর্তি বাতিল না করা হলে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ছবি ও তথ্য বিলবোর্ড আকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোড়ে মোড়ে লাগানো হবে বলেও হুশিয়ারি দেন তারা। এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সিকাণ্ডের তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানানো হয়।

রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহবায়ক আবদুল মজিদ অন্তর বলেন, শিক্ষক কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয় কে নিজেদের সম্পত্তি মনে করে। তারা মনে করে এখানে পড়ালেখা করা চাকরি পাওয়া তাদের সন্তানদের মৌলিক অধিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তান হয়ে জন্ম নিলেই যেনো পরবর্তীতে সে শিক্ষক হবে।

সে যতো অযোগ্যই হোক। বর্তমানে দেশ যে ধ্বংসের দারপ্রান্তে এর দায় এই শিক্ষকদের নিতে হবে। যদি তিন দিনের মধ্যে তাদের ভর্তি বাতিল এবং পোষ্য কোঠা বাতিল না করা হয় তাহলে প্রশাসন ভবন অবরোধ এবং অকৃতকার্য হয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী এবং তার অভিভাবকের ছবি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে টানিয়ে দেওয়া হবে।

মানববন্ধনে নাগরিক ছাত্র ঐক্য সভাপতি মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, আজকের বিশ্ববিদ্যালয়কে পারিবারিক গোয়াল ঘরে পরিণত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থী যেখানে ৮৫ নাম্বার পেয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে সেখানে ১৯ নাম্বার পেয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীরাও একই ক্লাসে ক্লাস করছে।

যারা ফেল করেও ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছে তাদেরকে আমরা ক্লাস করতে দিতে পারি না। কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যাদের সন্তান অযোগ্য তাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো যায়গা হবে না।

আমরা চাই অবিলম্বে তিন দিনের ভেতরে পোষ্য কোটাসহ ফেল করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল করতে হবে। তা করা না হলে আমরা প্রশাসন ভবন ঘেরাও করবো।

কর্মসূচিতে রাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান বলেন, যেখানে একজন শিক্ষার্থীকে রাত-দিন পরিশ্রম করে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে হচ্ছে সেখানে একজন অযোগ্য শিক্ষার্থী শুধুমাত্র বাবা-মায়ের যোগ্যতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। এটা স্বাধীন দেশে মেনে নেওয়া যায় না। মহামান্য রাষ্ট্রপতি বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ভর্তি হবে মেধার ভিত্তিতে।

প্রশাসন যুক্তি দেখায় কোটার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীর ক্ষতি হচ্ছে না কিন্তু কিন্তু কোন যুক্তিতে আপনি পোষ্য কোটা রেখেছেন সেটার উত্তর দেন। এই শিক্ষকরা যদি সন্তানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ডুবাতে এরা তাদের সন্তানের জন্য দেশের মানও ডুবাতে পারে। এই শিক্ষকদের নূন্যতম নৈতিকতা বোধ নেই।

মানববন্ধনে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুল্লাহ মুহিব, সমাজ কর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আজাদসহ অনেকে। এসময় বিভিন্ন বিভাগের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।